






উন্নত প্রযুক্তিতে আখ চাষ ও গ্রামীণ জনজীবনে আখের গুরুত্ব
মোঃ আনোয়ার হোসেন, চারঘাট সাবজোন প্রধান, রাচিক।







১. অল্প বীজে আখ চাষ করা যায়।
২. অঙ্কুরোদগম ভালো হয়। ফলে জমিতে গ্যাপ হয় না।
৩. কুশির সংখ্যা বেশি হয়। ফলে মাড়াইযোগ্য আখ বেশি হয় পাওয়া যায়।
৪. ফলন বেশি হয়।
৫. আগাম পরিপক্কতা লাভ করে এবং চিনি আহরণের হার বেশি হয়।
৬. রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হয়।






জমি গভীর ভাবে চাষ ও মই দিয়ে ৮-৯ ইঞ্চি গভীর করে ৩ ফিট বা ১ মিটার পর পর লাঙ্গল/ ট্রেঞ্চার/ কোদাল দিয়ে নালা তৈরী করতে হবে। নালায় সব ধরনের সার দিয়ে নালার মাটিকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে সার মিশিয়ে দিতে হবে। ব্যাগ চারার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দুরত্বে ৪০-৫০ সে. মি. পর পর নালায় চারা রোপন করতে হবে। রোপনের পর চারার গোড়ার মাটি ভাল ভাবে চাপ দিয়ে শক্ত করে দিতে হবে যাতে চারাটি বাতাসে নড়ে বা সেচ দেওয়ার সময় উঠে না যায়। রোপনের পর পরই ১ টি অথবা প্রয়োজন বোধে ২ টি জীবনী সেচ প্রয়োগ করতে হবে। বেড অথবা যে কোন গাছ চারার ক্ষেত্রে নালায় সার মিশিয়ে কোদাল দিয়ে মাটি আলগা করে নালায় পানি দিয়ে রোপা ধানের মত আখের চারা নির্দিষ্ট দূরত্বে ৩০-৪৫ সে. মি. পর পর রোপন করতে হবে, এতে চারার মরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং জমিতে গ্যাপ (শূন্য স্থান) কম হয়।








আখ আমাদের দেশের খাদ্য ও শিল্পে ব্যবহার্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থকরী ফসল। গ্রামীণ জনজীবনে আখের গুরুত্ব অপরিসীম। চিনি, গুড়, রস ও চিবিয়ে খাওয়ার জন্য আখ চাষ করা হয়ে থাকে। আখ একটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল- যা জমিতে প্রায় ১৩-১৪ মাস থাকে। দেশে খাদ্যাভাব যখন কম ছিল, তখন আখ চাষ বেশ জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু দিন দিন খাদ্যশস্যসহ অন্যসব জিনিসের বাজারমূল্য অনেক বেড়ে যাওয়ায় এবং দীর্ঘদিন আখের মূল্য না বাড়ার কারণে কৃষক ভাইয়েরা আখ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। উচ্চফলনশীল ও স্বল্পসময়ে চাষ করা যায় এমন ফসল চাষ করে বেশি আয় করার ফলে ক্রমশ আখ চাষের জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তুলনামূলকভাবে নিম্নমানের জমিতে আখের চাষ করা হচ্ছে। ফলে আখের ফলন দিনকে দিন কমেই যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে সার্বিকভাবে দেশের চিনি শিল্পের ওপর।
আখ বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। সম্প্রতি আখের মূল্য মণ প্রতি ১৮০/= (একশত আশি) টাকা নির্ধারণ হওয়ায় এবং প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে পাটের আশানুরূপ ফলন না পাওয়ায় চাষিরা পাটের চেয়ে আখ চাষকেই লাভজনক মনে করছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতেই কিছু না কিছু আখের চাষ হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু আখ চাষের জন্য বেশ উপযোগী।? আধুনিক বা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চাষ করলে দেশের প্রতি হেক্টরে ১৩৫-১৩৬ টন আখ অনায়াসেই উৎপাদন হতে পারে। আখ থেকে চিনি, গুড় এবং রস পাওয়া যায়।
আখের সাথে সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজ, রসুন, মুলা, গাজর, সুগার বিট, মসুর, সরিষা, মুগ ডাল, ধনিয়া, মরিচ ও বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করে লাভবান হওয়ার যায়।
আখ এমন একটি অর্থকরী ফসল- যা শর্করা উৎপাদনের ৭৫ শতাংশ জোগান দেয়, কিন্তু পাশাপাশি এটা গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। আখ গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের বহুবর্ষজীবী ঘাস জাতীয় C4 উদ্ভিদ- যার উৎপত্তিস্থল হলো এশিয়া। বাণিজ্যিকভাবে চিনি উৎপাদনের জন্য সারা বিশ্বে তিনটি প্রজাতির আখচাষ হয়। সম্ভবত অনাদিকাল থেকেই আখ তার প্রাচীন নিবাস এশিয়ায় চাষ হয়ে আসছে। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ১০০টি দেশে আখের চাষ হয়। তবে প্রধান আখ উৎপন্নকারী দেশগুলো হচ্ছে ভারত, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, বার্বাডোজ, চীন, কিউবা, মেক্সিকো, মিশর, জ্যামাইকা, পেরু, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই, ফ্লোরিডা ও লুসিয়ানা।
১. আগাছা দমন।
২. উপরি সার ও কীটনাশক প্রয়োগ।
৩. সেচ প্রদান।
৪. রোগ ও পোকা দমন।
৫.গোড়ায় মাটি দেওয়া।
৬. ডিট্রাসিং (মরা পাতা পরিষ্কার) করা।
৭. পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা ও
৮. ঝাড় বাঁধা।



